ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং এ যারা নতুন তারা সচরাচর কয়েকটি প্রশ্ন করে থাকেন। যেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কমন প্রশ্ন কিভাবে ডলার ডিপোজিট করব এবং কিভাবে বিটকয়েন থেকে বিকাশ এ টাকা তোলা যায়।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং এ যারা নতুন তারা সচরাচর কয়েকটি প্রশ্ন করে থাকেন। যেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কমন প্রশ্ন কিভাবে ডলার ডিপোজিট করব এবং কিভাবে বিটকয়েন থেকে বিকাশ এ টাকা তোলা যায়। আর যারা নন-ট্রেডার, মানে বিভিন্ন সার্ভিস দিয়ে বিটকয়েন আয় করে কয়েনবেজ এ রাখেন , তাদের প্রশ্ন হল কয়েনবেজ (coinbase) থেকে বিকাশ (bkash) এ কিভাবে টাকা তোলা যায়। সহজ ভাবে বললে কিভাবে বিটকয়েন বিক্রয় করা যায়। এইটা দুইটা প্রশ্ন সব নতুন ট্রেডাররা করে থাকেন ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং এর শুরুতে। বাংলাদেশে অনেকগুলো এক্সচেঞ্জ সাইট আছে যেখানে দৈনিক লেনদেন হয় কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সেগুলো আসলে বিশ্বস্ত নয়। এছাড়াও তাদের রেটে অনেক হেরফের রয়েছে। এগুলো সবকিছুর সমাধান নিয়ে আমাদের আজকের আর্টিকেল।
বাইন্যান্স কি
বাইন্যান্স হল একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ যেটি ২০১৭ সালে এর যাত্রা শুরু করে। মাত্র ২-৩ বছরের মধ্যে মার্কেট লিডিং একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জে পরিনত হয়। বর্তমানে বাইন্যান্স সবচেয়ে বেশি ট্রেডিং ভলিউম জেনারেট করছে। বাইন্যান্স ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে সব ধরনের ট্রেডিং অফার করে থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের সেবাসমুহ তাদের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দিয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে পিটুপি লেনদেন শুরু করে বাইন্যান্স। তাদের দেখাদেখি পরবর্তীতে অনেক এক্সচেঞ্জ এই সুবিধা দেয়া শুরু করে তবে এখনো বাইন্যান্স পিটুপি লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে।
পিটুপি (P2P) লেনদেন কি?
প্রথমেই জেনে নেয়া যাক পিটুপি (P2P) লেনদেন আসলে কি। আমরা যারা বিটকয়েন এর সাথে পরিচিত তাদের মোটামুটি সবাই এই টার্ম সম্পর্কে অবগত থাকার কথা। পিটুপি লেনদেন মানে হচ্ছে ডিরেক্ট ক্রেতা এবং বিক্রেতার লেনদেন। বাংলাদেশে মানুষ বিটকয়েন কিংবা ইউএসডিটি লেনদেন করতে গিয়ে খুবই অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া লাগত যদিও লোকালবিটকয়েনস কিংবা প্যাক্সফুল ছিল এই সমস্যা সমাধানে কিন্তু তারা খুব বেশি জনপ্রিয় ছিল না। বাইন্যান্স এ পিটুপি নিয়ে আসার পর থেকে এখন মোটামুটি একদম নিরাপদভাবে বিটকয়েন ক্রয় কিংবা বিক্রয় করা যাচ্ছে। এইখানে রিস্ক নেই বলতে হয়। এর কারন, বিক্রেতার এর ডলার বাইন্যান্সে লক করা থাকে। এইখানে আমি একটা পয়েন্ট তুলে ধরতে চাই। পিটুপি মানে সরাসরি বিটকয়েন ক্রেতা এবং বিক্রেতার লেনদেন হবে। যদিও আমরা সেটাই দেখছি, বাইন্যান্স এর পিটুপি লেনদেন কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পিটুপি নয়। এর কারণ বাইন্যান্স আমাদের ডলার হোল্ড করে রাখে। প্রকৃত অর্থে পিটুপি মানে কোন তৃতীয়পক্ষের হস্তক্ষেপ থাকবে না।
কিভাবে বিটকয়েন থেকে বিকাশ এ টাকা তোলা যায়?
বিটকয়েন থেকে বিকাশ এ টাকা নেয়া কিংবা বিকাশ থেকে বিটকয়েন এ রুপান্তর করা একসময় বাংলাদেশের মানুষের জন্য খুবই কঠিন ছিল। কিন্তু বাইন্যান্স কিংবা আরো কিছু এক্সচেঞ্জ পিটুপি নিয়ে আসায় আমাদের লেনদেন করাটা সহজ হয়ে গেল। আমি আপনাদের সাথে আজকে শেয়ার করবো কিভাবে বাইন্যান্স এর সাহায্যে বিটকয়েন থেকে বিকাশ এ টাকা নিবেন কিংবা কিভাবে বাইন্যান্স এ বিটকয়েন ক্রয় করবেন। চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক প্রথমেই কিভাবে বাইন্যান্সে বিটকয়েন বিক্রয় করে বিকাশে টাকা তোলা যায়।
কিভাবে বাইন্যান্স এ বিটকয়েন থেকে বিকাশ এ টাকা তোলা যায়?
বাইন্যান্সে কিভাবে বিটকয়েন থেকে বিকাশ এ টাকা তোলা যায় তার বিস্তারিত স্টেপগুলো নিচে দেয়া হল।
স্টেপ-১ Binance.com এ গিয়ে প্রথমেই আপনি একটি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করবেন। আপনার ইমেইল, নাম এবং অন্যান্য তথ্য দিয়ে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন।
স্টেপ-২ আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, স্মার্ট কার্ড কিংবা পাসপোর্টের যে কোন একটি দিয়ে আপনার একাউন্ট ভেরিফাই করে নিন। মনে রাখবেন, ভেরিফাই ছাড়া লেনদেন করতে পারবেন না।
স্টেপ-৩ তারপর ডিপোজিট ক্রিপ্টোতে যাবেন এবং সেখানে বিটকয়েন নির্বাচন করবেন; যেমনটা ছবিতে দেখানো আছে। মনে রাখবেন, বিটকয়েন এর জন্য শুধুমাত্র বিটকয়েন এড্রেস ব্যবহার করতে হবে। বাইন্যান্স থেকে আপনার এড্রেস কপি করে সেখানে আপনার বিটকয়েন ওয়ালেট থেকে উক্ত এড্রেসে বিটকয়েন পাঠান। বিটকয়েন জমা হতে একটু সময় লাগবে। আপনার বিটকয়েন আপনার বাইন্যান্স ওয়ালেটের স্পট ওয়ালেটে যোগ হবে।
স্টেপ-৪ আপনার ওয়ালেটে যান। সেখান থেকে ট্রান্সফার খুজে বের করুন। ট্রান্সফারে গিয়ে আপনার স্পট ওয়ালেটে (Spot Wallet) থাকা বিটকয়েনগুলো ফান্ডিং ওয়ালেটে (Funding Wallet) নিয়ে যান।
স্টেপ-৫ এখন আপনি ট্রেড এ গিয়ে পিটুপি অপশন খুজে নিন। পিটুপিতে গিয়ে অনেক অপশন দেখবেন। যেমন- USDT, BUSD, BTC, ETH ইত্যাদি। এর মানে এইখানে যত কয়েন আছে সবগুলো আপনি এইখান থেকে টাকায় রুপান্তর করে নিতে পারবেন। সেখানে গিয়ে আপনি Sell নির্বাচন করুন, যেহেতু আপনি বিক্রয় করবেন।
স্টেপ-৬ এখন আপনি কার কাছে বিটকয়েন বিক্রয় করবেন সেটা নির্বাচন করুন। ভালো করে ট্রেডারদের ফিডব্যাক স্কোর দেখবেন, কমপ্লিশন স্কোর দেখবেন। যত বেশি হবে, তত ভালো। তারপর আপনার বিকাশ নাম্বার নির্বাচন করবেন। বলে রাখা ভালো, পিটুপি প্রোফাইলে আপনি যতগুলো ইচ্ছে বিকাশ/নগদ নাম্বার সংযুক্ত করতে পারবেন।
বাইন্যান্সে বিটকয়েন থেকে বিকাশ এ টাকা তোলার নিয়ম আশা করি বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি বিকাশ দিয়ে বিটকয়েন ক্রয় করতে চান তাহলেও মোটামুটি একই নিয়ম অনুসরন করতে হবে। শুধুমাত্র স্টেপ-৫ এ Sell এর জায়গায় Buy নির্বাচন করবেন। যদি কিছু বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে এইখানে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন।