গত ২১শে মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন অনফো কয়েনের সহ প্রতিষ্ঠাতা এবং অন্যতম বিটকয়েন মিলিয়নিয়ার ড. জন ফর্সিথ। গতকাল পুলিশ তার মৃত লাশ উদ্ধার করে যদিও কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে কিংবা কেন হত্যা করেছে এই বিষয়ে পুলিশ কিছুই জানায় নি।
ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগ কিংবা সহ প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তার অন্যতম পরিচয়, তিনি একজন ডাক্তার। গত ২১শে মে মিসোরির মার্চি হাসপাতালে অফিস সময়ে তাকে দেখা যায় নি হাসপাতালে। সেখান থেকেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পর তার পরিবার স্থানীয় প্রশাসনে ড. জন নিখোঁজ বলে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সে বিষয়ে জানান।
ড. জনের ছোটভাই রিচার্ড ফর্সিথ জানান, “ড. জন কখনো অফিস মিস করেন না। উনি এই সময়ে হাসপাতালে থাকার কথা। এটা আমার কাছে তখনই সন্দেহজনক ছিল।”
স্থানীয় প্রশাসন এই ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে থাকেন। এর ধারাবাহিকতায়, ২৮শে মে, ড. জনের সেডান গাড়িটি হাসপাতাল থেকে প্রায় ১ মেইল দূরে খুঁজে পায়।
ড. জনের মানিব্যাগ, পাসপোর্ট, ল্যাপটপ এবং ব্রিফকেস তার আনলক করা গাড়িতেই পাওয়া যায়। তার ভাই জানান, “তার মোবাইল গাড়ির মধ্যেই ছিল। এইটা আমার কাছে খুবই অস্বাভাবিক মনে হয়েছে, কারণ উনি সবসময় তার মোবাইল সাথে রাখেন। আমার মনে হয় না ড. জন এটা ইচ্ছে করেই রেখে গিয়েছে।”
মে মাসের ৩০ তারিখ, ড. জনের মৃতদেহ খুঁজে পায় পুলিশ। ড. জনকে তারা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় খুঁজে পান। তাকে সর্বশেষ যেখানে দেখা গিয়েছিল তার থেকে আরো ১ ঘন্টা দূরের রাস্তায় খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও এইটা শুরু থেকেই একটা সন্দেহজনক ঘটনা এবং তার মৃত্যুটাও রহস্যজনক, পুলিশ এই ব্যাপারে কিছুই বলছে না। পুলিশের চোখে এখনো এইটাকে পরিকল্পিত হত্যা বলে মনে হচ্ছে না।
৪৯ বছর বয়সী ড. জন তার ভাইয়ের সাথে অনফো কয়েন প্রতিষ্ঠা করেন ২০২০ সালে। এই কয়েনের মূল কাজ ছিল নেটওয়ার্ক মাইনিং করার জন্য অন্য মানুষকে রেফার করা, অনেকটা পিরামিড স্কিম তথা পঞ্জি স্কিম।
তনে অনফো কয়েন মানুষকে আকৃষ্ট করার মূলমন্ত্র ছিল ইউ.এস ডলারের মান কমে যাওয়ার দিক তুলে ধরা এবং বিকল্প হিসেবে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করা। অনেকেই এই তথাকথিত ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করেন।
ফোর্বসের ২০২০ সালের এক প্রতিবেদনে ড. জন ফর্সিথকে অন্যতম বিটকয়েন মিলিয়নিয়ার হিসেবে তুলে ধরা হয়। ড. জন শুরুর দিক থেকে বিটকয়েন ব্যবহার করে আসছেন।
ফর্সিথের এই মৃত্যু অবশ্যই রহস্যজনক। তবে, ক্রিপ্টোকারেন্সি জগতে এইরকম রহস্যজনক মৃত্যু এইবারই প্রথম নয়। গত এপ্রিলে, ক্যাশ এপের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্কয়ার এর সাবেক প্রযুক্তি প্রধান বব লিকে রহস্যজনকভাবে হত্যা করা হয়। যদিও পুলিশ একজনকে এই মামলায় গ্রেফতার করেছে, পুলিশ এই হত্যার পিছনে মূল কারণ খোলাসা করে নি।
কেন সবার সচেতন হওয়া জরুরী
আমরা অনেকেই বন্ধু বান্ধবের সাথে আমাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি হোল্ডিং নিয়ে কথা বলে থাকি। অনেক সময় শেয়ার করে থাকি কিভাবে কি করছি। প্রথমত, ক্রিপ্টোকারেন্সি বাংলাদেশে অবৈধ। এছাড়া, মানুষ লোভের বশবর্তী হয়ে অনেক কিছুই করতে পারে। আমাদের অবশ্যই উচিত নয় আমাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি হোল্ডিং সম্পর্কে মানুষকে শেয়ার করা কিংবা কিভাবে আমরা হোল্ড করছি সে ব্যাপারেও একদম কাউকে কিছু শেয়ার না করা। মানুষকে বিশ্বাস করে এইসব কথা শেয়ার করলে আপনার কাছে থাকা ক্রিপ্টোকারেন্সির লোভে তারা আপনার অনেক ক্ষতিই করতে পারে।