জিপিউদিয়ে সাধারনত ইথেরিয়াম মাইনিং বা রেভেন কয়েন মাইনিং করা হয়ে থাকে। এর মাঝে ইথেরিয়াম মাইনিং সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। ইথেরিয়ামের ক্ষেত্রে ইতিহ্যাশ (Ethash) এলগরিদম ব্যবহার হয়ে থাকে।
ইতিহ্যাশ এলগরিদমে MH/s (মেগা হ্যাশ প্রতি সেকেন্ড ) দিয়ে জিপিউ এর মাইনিং করার সক্ষমতা বুঝানো হয়। বর্তমানে জিপিউ তে ১৮ Mh – ১২৫ Mh পর্যন্ত পাওয়া যায় এবং এর বিদ্যুত খরচ ৬৫-৩২০ ওয়াট পর্যন্ত হয়। ইতিহ্যাশ এলগরিদমের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন জিপিউ র্যাম সাইজ হচ্ছে ৬ জিবি।
ইথেরিয়াম মাইনিং শুরু করতে আপনার যে জিনিস গুলো লাগবে
মাদারবোর্ড ।
রাইজার কার্ড , প্রসেসর , র্যাম ,
এসএসডি / পেনড্রাইভ ।
জিপিউ ।
পাওয়ার সাপ্লাই ।
কুলিং সিস্টেম ।
বিদ্যুৎ।
ইন্টারনেট ।
মাদারবোর্ড
একটা মাদার বোর্ডে কয়টি জিপিউ কানেক্ট করতে পারবেন তা নির্ভর করে আপনার মাদারবোর্ডে কয়টি PCIE 1x & 16X স্লট আছে। Pcie স্লট যত গুলো থাকবে ততগুলো জিপিউ কানেক্ট করতে পারবেন।
ছবিতে রেড মার্ক করা স্লট গুলোতে জিপিউ কানেক্ট করতে পারবেন ।
আপনি যদি ১-২ টা জিপিউ দিয়ে মাইনিং শুরু করতে চান তাহলে যে কোন ১-২ টা PCIE স্লট আছে এমন মাদারবোর্ড দিয়ে করতে পারেন। যদি আরো জিপিউ বাড়াতে চান তাহলে ডেডিকেটেড মাইনিং মাদারবোর্ড আছে যেগুলোতে ৬-১৯ টা Pcie স্লট থাকে ও মাইনিং এর জন্য উপযুক্ত বায়োস থাকে। যেমন আমি নিচে কিছু মডেল দিচ্ছি।
Asus B250 Mining Expert 19slot
Asrock h110 Pro BTC+ 13 slot
Biostar Tb250-BTC D+ 9 slot
Gigabyte GA-H110–D3A7 slot
রাইজার কার্ড
মাদারবোর্ডের ১x স্লট কে ১৬x এ কনভার্ট করার জন্য এবং এক মাদারবোর্ডে যাতে জিপিউ বেশি লাগাতে পারেন বড় স্পেস নিয়ে সেজন্য রাইজার কার্ড ব্যবহার হয়।
প্রসেসর , র্যাম
প্রসেসর বা র্যামের তেমন কোন কাজ নেই । শুধু মাত্র মাদারবোর্ড অন রাখা ছাড়া। সাধারনত মাইনিং মাদারবোর্ড গুলোতে ৬/৭ জেনারেশন এর প্রসেসর বেশি ব্যবহার হয়। ৬/৭ জেনারেশনের সেলেরন , পেন্টিয়াম , I 3,5,7 যে কোন প্রসেসর হলেই কাজ হবে। র্যাম মাদারবোর্ড অনুযায়ী DDR3 / DD4 নিতে হবে। প্রথমে চাইলে ৪ জিবি নিলে হবে জিপিউ বাড়লে আরেকটা ৪ জিবি লাগিয়ে নিলেই হবে।
এসএসডি / পেনড্রাইভ
মাইনিং এর জন্য পেন্ড্রাইভ হলে USB 3.0 ১৬ জিবি । হার্ডডিস্ক বা এসএসডি হলে ১২৮ জিবি এনাফ। পেন্ড্রাইভ বা এসএসডি ভাল মানের নিলে আপনার রিগের ডাউন টাইম কমবে ও ফাস্ট বুট হবে।
জিপিউ
জিপিউ সিলেকশন ডিপেন্ড করছে আপনার বাজেট ও মার্কেট এভেইলাবিলিটির উপরে। আপনি যত মাইনিং এফিশিয়েন্ট জিপিউ নিবেন দাম তত বেশি হবে ও আপনার রেভিনিউ ও তত বেশি হবে কম বিদ্যুৎ খরচে। ইথেরিয়াম মাইনিং করা যায় এমন কিছু জিপিউ গুলো নিন্মরুপ-
Model
RAM
MH / S
Power
Rx 470 , 480 , 570 , 580
8GB
30
130 W
Rx 5500 XT
8GB
28
105 W
Rx 5600 XT
6GB
44
110 W
Rx 5700 / 5700 XT
8GB
55
125 W
Rx 6700 XT
12GB
48
140 W
Rx 6800 / 6800 XT
16 GB
64
150
Rx 6900 XT
16GB
64
124-240 W
RX Vega 56/64
8GB
52
150-250 W
AMD Radeon VII
16GB
104
195 W
Model
RAM
MH / S
Power
GTX 1060
6GB
18-26
65-110 W
GTX 1660 Ti
6GB
30
75 W
GTX 1660 Super
6GB
32
74 W
GTX 1070
8GB
27
130 W
GTX 1070 Ti
8GB
30
120 W
GTX 1080
8GB
35
150 W
GTX 1080 Ti
11GB
48
210 W
RTX 2060
6GB
33
90 W
RTX 2060 Super
8GB
42
110 W
RTX 2070
8GB
43
110 W
RTX 2070
8GB
44
110 W
RTX 2080
8GB
45
126 W
RTX 2080 Super
8GB
45
125 W
RTX 2080 TI
11GB
57
150 W
RTX 3060
12GB
50
110 W
RTX 3060 TI
8GB
60
120 W
RTX 3070
8GB
62
120 W
RTX 3080
10GB
100
240 W
RTX 3090
24GB
120
310 W
বিঃদ্রঃ- জিপিউ হ্যাশরেট ও পাওয়ার ইউসেজ ভেন্ডর , চিপসেট অনু্যায়ী ৫% কম বেশি হতে পারে।
পাওয়ারসাপ্লাই
মাইনিং এর জন্য ATX বা সার্ভারপাওয়ার সাপ্লাই ব্যবহার করা হয়।
বাজারে ৩০০ থেকে ২০০০ ওয়াট পর্যন্ত ATX পাওয়ারসাপ্লাই পাওয়া যায়।
মাইনিং এর জন্য বাজারের সেরা পাওয়ার সাপ্লাই যেগুলো গোল্ড , প্লাটিনাম , টাইটেনিয়াম রেটেড দাম অনুযায়ী ৯৭% পর্যন্ত পাওয়ার এফিশিয়েন্ট পাওয়ারসাপ্লাই পাওয়া যায়।
পাওয়ার সাপ্লাই কেনার সময় GOLD / PLATINUM / TAITANIUM স্টিকার দেখে নিবেন। ভাল মানের পাওয়ারসাপ্লাই আপনার বিদ্যুৎ খরচ ১০-১৫ % কমাবে ও আপনার দামি হার্ডওয়্যার গুলোর সিকিউরিটি দিবে যাতে ওভার ভোল্টেজে নষ্ট না হয়।
ভাল মানের ATX পাওয়ার সাপ্নাই বাংলাদেশের বাজারে অনেক দাম পরে সেক্ষেত্রে সার্ভার পাওয়ারসাপ্লাই ব্যবহার করা যায়। সার্ভার পাওয়ার সাপ্লাই সাধারনত ৭৫০ ও ১২০০ ওয়াট এর প্লাটিনাম রেটেড হয়। রিফারবিশ নিলে অনেক কম মুল্যে পাওয়া যায়।
সার্ভার পাওয়ারসাপ্লাই এর কিছু মডেল- DPS-1200FB A DPS-1200QB A PS-2751-5Q PS-2751-LF-1F DPS-700LB D DPS-750RB A DELL DPS-1200MB
পাওয়ারসাপ্লাই ব্যবহার করার সময় মাথায় রাখতে হবে সর্বোচ্চ ৮০% লোড দেয়া যাবে। অর্থাৎ ১০০০ ওয়াটের পাওয়ারসাপ্লাই হলে ৮০০ ওয়াট লোড দেয়া যাবে। ফুল লোডে ব্যবহার করলে পাওয়ার সাপ্লাই তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।
কুলিং সিস্টেম
জিপিউ মাইনিং অবস্থায় প্রচুর গরম বাতাস বের করে। এই গরম বাতাস বের করে ঠান্ডা বাতাস ঢুকাতে হয় রুম ঠান্ডা রাখার জন্য। রুম ঠান্ডা করার জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাই সি এফ এম ফ্যান ব্যবহার করা যায়। আর রিগের কাছা কাছি ছোট কেসিং এর হাই আরপিএম ফ্যান ব্যবহার করা যায়। অতিরিক্ত তাপমাত্রা জিপিউর মেয়াদ কমিয়ে দিবে। যত ঠান্ডা রাখাতে পারবেন তত বেশিদিন আপনার জিপিউ চলবে। কিছু কার্ডে ওয়াটার কুলিং সিস্টেম ও ব্যাবহার করা যায়।
বিদ্যুৎ
বাংলাদেশে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ একটা সমস্যা। বিদ্যুৎ না থাকলে মাইনিং অফ। তবে চেষ্টা করতে হবে রিনিউএবল এনার্জি সোর্স ব্যবহার করা যেমন সোলার , উইন্ডমিল , জল বিদ্যুৎ । মাইনিং এ ৪৫% রিনিউএবল এনার্জি ব্যবহার করে মাইনাররা। ভোল্টেজ আপডাউন এর সমস্যা থাকলে স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করা যায়। বিদ্যুত খরচ কমাতে চাইলে একাধিক মিটার ব্যাবহার করতে হবে।
ইন্টারনেট
আগের আর্টিকেলেই বলেছি ইন্টারনেট স্পিড কোন ম্যাটার না সিংগাপুর এর মাইনিং পুল গুলোতে পিং টাইম যত কম হবে তত ভাল। 50-60 ms সবচেয়ে ভাল পিং।