গত কয়েক সপ্তাহ ধরে, প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে নাইজেরিয়ার ক্রিপ্টো ব্যবহারকারীরা বেশ মোটা প্রিমিয়ামে অর্থাৎ সাধারণ দামের চেয়ে বেশি দামে বিটকয়েন (বিটিসি) কিনছেন। বাস্তবে, মনে হতে পারে যে এই রিপোর্টগুলি সঠিক, কিন্তু আসলে ভুল, এই রিপোর্টিতে কীভাবে তা ভুল সেটি নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
নাইজেরিয়ানরা $৩৪ হাজার ডলারে বিটকয়েন কিনছে না
কিছুদিন যাবদ বেশ কিছু প্রতিবেদনে দাবী করা হয়েছে যে বর্তমানে নাইজেরিয়ানরা $৩৪ হাজার ডলার মূল্যে বিটকয়েন কিনছেন। এই প্রতিবেদনগুলি প্রমাণ করছে যে ডিজিটাল সম্পদ বর্তমানে P2P (পিয়ার-টু-পিয়ার (P2P) পরিষেবা হল একটি বিকেন্দ্রীভূত প্ল্যাটফর্ম যেখানে দুজন ব্যক্তি তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই একে অপরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে) প্ল্যাটফর্মে ১৭ মিলিয়ন নাইজেরিয়ান নাইরার বিনিময়ে বিক্রি হচ্ছে (যা নাইজেরিয়ানরা ক্রিপ্টো কিনতে এবং বিক্রি করতে ব্যবহার করছে) কিন্তু তারপরে তারা মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরকারী হার $১ থেকে ৪৫৯.৮৯ নাইরায় (নাইজেরিয়ান মুদ্রা) বিটকয়েনের মূল্য $৩৪ হাজার ডলার বলে দাবী করছে।
এখন, পুর্বে উল্লেখিত প্রতিবেদনে, এটি সঠিক বলে মনে হতে পারে কিন্তু আসলে তা নয়, এর কারণ হল বর্তমানে সেই দেশে দুটি ভিন্ন মার্কিন ডলারের হার রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং কালো বাজারের (Black Market) হার ব্যাপকভাবে ভিন্ন।
গত পহেলা ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত, মার্কিন ডলার থেকে নাইরার কালো বাজারের হার প্রায় ৭৫০ যা দেশের বৃহত্তর জনগণ ব্যবহার করে। যদি BTC-এর মূল্য সরকারী কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের হার ব্যবহার করে রূপান্তরিত হয়, তাহলে এটি $৩৪ হাজার ডলার হবে। কিন্তু যেহেতু নাইজেরিয়ার সাধারণ জনগণ আক্ষরিক অর্থে সরকারী উদ্দেশ্যে কিংবা আন্তর্জাতিক স্কুলের ফি প্রদান ব্যতীত দেশে ডলার পেতে পারে না। তারপরেও এটি চিন্তার কারণ হতে পারে, কারণ কালো বাজারে ডলারের হার দেশের সাধারণ জনগণ সহজে লুফে নেয়।
এই ব্ল্যাক মার্কেট রেট ব্যবহার করে,যেকেউ অন্য সবার মতো একই দামে নিতে পারবেন – প্রায় $২২,৯০০ ডলারে যেখানে ডিজিটাল সম্পদ ট্রেড স্করা হয়ে থাকে। এছাড়াও, যেকেউ টোকেনগুলিকে যে দামে কিনে সেই একই দামে ডলারে বিক্রি করে দেয়, যা সেন্ট্রাল ব্যাংক (CBN) এর ডলারের হারে নয়।
তাহলে কি নাইজেরিয়ার নাগরিকরা বিটকয়েন কেনার জন্য বেশি অর্থ খরচ করছে? না। তারা বরং মার্কিন ডলার কেনার জন্য বেশি অর্থ প্রদান করছে। মার্কিন ডলারের এই এই উর্ধ্মুখী দেশের সব কিছুর ক্রয়-বিক্রয় হারকে প্রভাবিত করে এবং বিটকয়েনও এর ব্যতিক্রম নয়।
বিটকয়েনের দাম সম্প্রতি সাধারণ বাজার মূল্যের থেকে ৫০% বেশি বেড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, সেগুলি ভুল। বিটকয়েন সর্বদা সেই দেশে কালোবাজারি ডলারের দামে লেনদেন করেছে, তাই এটি কোনও ভাবেই নতুন ঘটনা নয়।
বিটকয়েন বেশি দামে কেনার কারণে নাইজেরিয়াতে এখন যে সমস্যা হতে পারে তা হলো অর্থ লেনদেনের সীমা কমিয়ে আনা। যদিও এমন না যে বিটকয়েনের মূল্য সেই দেশে হুট করে ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে।
আমাদের সংবাদ সবার আগে পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন করুন- https://t.me/coinalapnews