CoinShare একটি নতুন প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে বিটকয়েন মাইনিং এ শক্তির ব্যবহার এবং কার্বন নির্গমনের বিষয়ে অতিমাত্রায় উদ্বেগ রয়েছে।
বিটকয়েন মাইনিং পরিবেশের জন্য ভালো, এমনটা বলা কঠিন। কিন্তু ডিজিটাল অ্যাসেট ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম CoinShares এর একটি নতুন গবেষণা থেকে জানা যায়, কার্বন নির্গমনের উপর এর প্রভাব খুবই ন্যূনতম, বিশেষ করে যখন গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেমের সাথে তুলনা করা হয়।
CoinShares এর মতে, বিটকয়েন মাইনিং নেটওয়ার্ক ২০২১ সালে আনুমানিক ৪১ মেগাটন (Mt) CO2 নির্গমনের জন্য দায়ী ছিল – যা আগের বছর ৩৬ Mt ছিল৷ যদিও এটি বিশ্বব্যাপী কার্বন নির্গমনের ০.০৮% এরও কম। Galaxy Digital থেকে ২০১৯ সালের একটি গবেষণায় বলে, এটি সমগ্র ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেমে আনুমানিক ১৩০ Mt নির্গমন করে৷ অথচ 5,830 Mt নির্গমনের জন্য শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ই দায়ী ছিল৷
পরিবেশবিদরা বিটকয়েনের শক্তির অপচয় নিয়েও সমালোচনা করেছেন নেটওয়ার্কে বিদ্যুত খরচ বেশি হচ্ছে। বিটকয়েন নেটওয়ার্ক পরিচালনা করার জন্য প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়, কারণ বিটকয়েন “মাইনাররা” ক্রিপ্টোগ্রাফিক পাজল ক্র্যাক করার চেষ্টা করে এবং BTC উপার্জন করে; প্রক্রিয়াটিতে অনেক ব্যবহারকারী রয়েছে, যাদের মধ্যে নেটওয়ার্কটিকে ডিস্ট্রিবিউটিং করা হয়ে থাকে,যেটি ব্লকচেইনকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
শুধুমাত্র বিটকয়েন নয়, অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সিতেও সমালোচনার মুখোমুখি পড়ছে। NFTs, ভার্চুয়াল আর্ট এবং ডিজিটাল সংগ্রহের মতো এসেটকে মালিকানা দেয়ার কাজটি ব্লকচেইন-ভিত্তিক করা হচ্ছে। যদিও বেশিরভাগ এনএফটি ইথেরিয়াম ব্লকচেইনে ইস্যু করা হয়েছে, যা বিটকয়েনের মত মাইনিং প্রক্রিয়া ব্যবহার করে, অন্যান্য গুলো সোলানার মতো “প্রুফ-অফ-স্টেক” নেটওয়ার্কে রক্ষিত হয়, যার জন্য মাইনিং এর প্রয়োজন হয় না এবং অনেক কম শক্তি ব্যয় হয়।
যদিও CoinShares এনএফটি বা ক্রিপ্টোকে নিয়ে এত চিন্তিত নয়, তবে এটি মনে করে যে বিটকয়েনের জন্য ভয় আছে, এটির শক্তির ব্যবহার নিয়ে “অনেক ভুল বোঝাবুঝি” হচ্ছে। ফার্মটি তার বিশ্বাস করে”বিটকয়েন সমাজের জন্য একটি বড় সুবিধা” যার পরিবেশগত খরচ কম কিন্তু আমাদের জন্য এটি প্রয়োজনীয়।
মনে করা হচ্ছে, মাইনিং এ বিদ্যুৎ খরচ অনেক কমে যাবে কারণ নেটওয়ার্কটি ওইভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে।
CoinShares মনে করে,শক্তি ব্যবহার আরো কমে যাবে, কারণ “মাইনার এমন জায়গা বা মাধ্যম খুজছে,যেখানে সস্তা এবং পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করা যায়।” যেমন,তেলের খনি হতে উপজাত হিসাবে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যে টেক্সাসে গ্যাস পুনরুদ্ধার করার একটি উপায় হিসাবে এটিকে মাইনিং এ ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে অন্যথায় এটিকে পুড়িয়ে ফেলা হতে পারে। CoinShares এর মতামত অনুসারে, এটিকে শক্তির জন্য ব্যবহার করলে গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো যেতে পারে।
প্রতিবেদন অনুসারে, চারটি অঞ্চল- কাজাখস্তান দেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা এবং কেন্টাকি রাজ্য এবং কানাডার আলবার্টা প্রদেশ- বিটকয়েন মাইনিং কার্বন নির্গমনের ৪৩% জন্য দায়ী কিন্তু নেটওয়ার্কের মোট শক্তির মাত্র ২৬% ই সরবরাহ করছে।
অন্যান্য অঞ্চল, যেমন সুইডেন এবং কুইবেক এবং ম্যানিটোবা প্রদেশ, যেখানে বিটকয়েন হ্যাশরেট আনুমানিক ৫.২%, কিন্তু খুবই কম পরিমাণ নির্গমনের জন্য দায়ী।
CoinShares জোর বলছে, এটি পরিবর্তন হবেই। কিন্তু তা না হলে “বিটকয়েনের সুবিধা, এর ফলে হওয়া নির্গমনের কাছে গন্য হবে না।”