বাংলাদেশী ডেটা সায়েন্টিস্ট ও সিলিকন ভ্যালির বাংলাদেশি উদ্যোক্তা তারিক আদনান মুন নিয়ে প্রথম প্রকাশ্যে খবর আসে করোনার পর ২০২০ সালে করোনা মাহামারীর মধ্যে। আমেরিকায় বসবাসরত কয়েকজন বাংলাদেশী ও মার্কিন মেধাবী তরুণ সদস্যদের নিয়ে তিনি একটা স্টার্টআপ শুরু করেছিলেন যার বর্তমান প্রধান কার্যালয় নিউইয়র্কে অবস্থিত। সান ফ্রান্সিস্কোতে যাত্রা শুরু করা তার এই স্টিলথ স্টার্টআপের জন্য ১.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ পেয়েছিলেন সে বছর।
যে ধরনের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান নিজেদের জনসাধারণের চোখ এড়িয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মিডিয়ায় বা প্রকাশ্যে আসে না, সে ধরণের স্টার্টআপকে বলা হয় স্টিলথ স্টার্টআপ(Stealth Startup)।
প্রি-সীড রাউন্ডের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ছিলো পলিগন এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা জয়ন্তি কানাই, ড্রাগণফ্লাই ক্যাপিটালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এলেক্স প্যাক, রিভারল্যান্ড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী রিচার্ড হাকলসহ আরো কয়েকজন। বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিলো সিমা ক্যাপিটাল, ফোর এরো’জ ভেঞ্চার, টাগোমি, টেরা ইকো সিস্টেম ইত্যাদি।
সর্বশেষ ২৩-ই ফেব্রুয়ারী পুনরায় তার ডিসেন্ট্রালাইজড ফিন্যান্স স্টার্টআপ এফাইন প্রটোকল ৫৫ কোটি টাকার সমমূল্যের( ৫.১ মিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ পেতে সক্ষম হন। বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে জাম্প ক্রিপ্টো, হ্যাক ভিসি ও জাম্প, সার্কেল ভেঞ্চার, কয়েনবেস ভেঞ্চার, প্রোপেল ভিসিসহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠান।
এফাইন কি
এফাইন মূলত ইথেরিয়াম ও পলিগন ব্লকচেইনভিত্তিক একটি এপ। একজন ইউজার যেন সহজেই তাঁদের ডলারের পাশাপাশি ব্লক চেইনভিত্তিক অন্যান্য যেসব সম্পদ রয়েছে সেগুলো সহজ, নিরাপদ ও সচ্ছতার সাথে সংরক্ষণ করতে পারেন সেটি নিয়ে কাজ করে থাকে। ব্লক চেইন ও ডিসেন্ট্রালাইজড অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের বিপ্লবের ফলে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এর ব্যবহারকারীরা। এই পথকে সুগম ও সহজ করতেই এফাইন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তারিক আদনান মুন। ইতোমধ্যে
ব্যবহারকারীরা এই এপের মাধ্যমে ২০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছেন।
দেশীয় একটা স্বনামধন্য পত্রিকাকে তিনি আরো জানান,
“বাজারের অস্থিতিশীলতা আর অসদুপায় ডিসেন্ট্রালাইজড ফিন্যান্সে লাভের প্রক্রিয়াকে অস্বচ্ছ আর কঠিন করে তুলেছে। এই সমস্যাগুলো চ্যালেঞ্জ করে ব্যবহারকারীদের মুনাফা দেখানো বেশ কঠিন।
তিনি জানান, ঝুঁকির পরিমান বেশি থাকাতে বিশ্বেরজায়ান্ট ডিসেন্ট্রালাইজড এক্সচেঞ্জ ইউনিসোয়াপ প্রতিদিন ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ১৫ লাখ ডলারেরও বেশি ফি নেয় অথচ তাঁরা শেষ এক বছরে ১০ কোটি ডলারের বেশি লোকসান গুনেছেন”।
আর্টফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স(AI) ও বট(Bot) টেকনোলজি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের ব্যবহারকারীদের সম্পদকে আরো বেশি লাভবান করবে বলে আভাস দিয়েছেন এই তরুণ উদ্যোক্তা। উল্লেখ্য,এই টেকনোলজিটা আগে বড় জায়ান্ট ব্যাংক বা হ্যাজ ফান্ডসের মতো প্রতিষ্ঠানরাই ব্যবহার করতো যে কারণে তারাই এসব প্রসেসে লাভ করার সুযোগ পেত। বাংলাদেশী মেধাবী তরুনদের সমন্বয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি এই সুবিধা সবার কাছে নিয়ে যেতে চায় বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
তারিক আদনান মুন এর পরিচয়
২০০৬ ও ২০১০ সালে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে বিজয়ী তারিক আদনান মুন ৫১তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে ব্রোঞ্জ পদক পান।
স্কলারশিপ নিয়ে হার্ভার্ডে পাড়ি জমান এবং হার্ভার্ডে পড়ার সময় বিভিন্ন অর্জনের পাশাপাশি নিজের স্টার্টআপ নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি স্বনামধন্য কিছু প্রতিষ্ঠানের ( Entertainment Data Oracle, eBay) ড্যাটা সাইন্টিস্ট হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।