বর্তমানের অবস্থান থেকে লুনা ও ইউএসটির মূল্য বাড়ার সম্ভাবনা খুবই কম । আর্টিকেলটি লিখার সময় লুনার মূল্য ০.০০০০১১ ডলার এবং ইউএসটির মূল্য ০.০৫৮৪ ডলার । লুনার মোট সার্কুলেশন সাপ্লাই ৬৫৩৪.৬৩ বিলিয়ন এবং ইউএসটির ১১.২৮ বিলিয়ন । অর্থাৎ টোকেন দুটিকে যদি ১ ডলারের বিনিময় মূল্য পৌঁছতে হয় তাহলে যথাক্রমে ৬৫৩৪.৬৩ ও ১১.২৮ বিলিয়নের মার্কেট ক্যাপে পৌঁছতে হবে । যা বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী নিশ্চিত অসম্ভব ব্যাপার । কয়েন আলাপের আজকের আলোচনা “টেরার লুনা ও ইউএসটির মূল্য বাড়ার সম্ভাবনা আছে কি ?”
লুনা ক্র্যাশের পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ
গত সপ্তাহে লুনা ও ইউএসটি ক্র্যাশ করার পর এখন পর্যন্ত টেরার ফাউন্ডারের পক্ষ থেকে তেমন গুরুতর কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি । কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন অবশ্যই তবে সেগুলো কোন ভাবেই গুরুত্বপূর্ণ বলা যায় না । ইউএসটির মূল্যকে ডলারের বিনিময়ে একই রাখার জন্য টেরাফার্ম তাদের সকল রিসার্ভকে বিক্রি করতে শুরু করে দিয়েছিলো । বিসার্ভ বিক্রি করার সময় বিনিয়োগকারীদের দিকে কোন প্রকারের ভ্রুক্ষেপও করা হয়নি । খুবই অচেতনভাবে তারা কাজটিকে করেছিলো । যা কোনভাবেই একটি ভাল পদক্ষেপ হতে পারে না । প্রজেক্টকে বাচাতে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া যেত বলে অনেকে বিশেষজ্ঞরাই মতামত দিয়েছেন ।
রিসার্ভ শেষ হবার পর ডো কোয়েন কমিউনিটি পোস্টের মাধ্যমে একটি টেরা লুনা থেকে নজর সরিয়ে ইউএসটির দিকে নিয়ে যান । যা বিনিয়োগকারীদের কাছে এখনও প্রশ্নবিদ্ধ একটি গর্হিত কাজ । তবে বিনিয়োগ বাচানোর শেষ চেষ্টাটুকু করে যাওয়া বিনিয়োগকারীরা অনেকটা একমত পোষণ করেন তার এই পোস্টের প্রতি । এই কমিউনিটি পোস্টের ২/৩ দিন পরেই ডো কোয়েন পুনরায় আরেকটি কমিউনিটি পোস্টের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রস্তাবনা নিয়ে আসেন । এই প্রস্তাবনাটিতেও বেশ অস্বচ্ছতা দেখা দেয় । অর্থাৎ বর্তমানে ডো কোয়েন সম্পূর্ণরূপেই কোন কিছুকে ঢাকার চেষ্টা করছেন ।
এইসব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলতে থাকে । ১৯-শে মে জানা যায়, মার্কেট ক্র্যাশ করার একদিন পূর্বে ডো কোয়েন টেরাফর্ম ল্যাবকে কোরিয়া থেকে বিলিন করেন । এটি বিনিয়োগকারীদের সন্দেহকে আরও গুরুতর করে তুলেছে । বর্তমানের এই ক্র্যাশের পেছনে অনেকেই টেরাফর্ম ল্যাবকে দায়ী করছেন ।
লুনা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত
ইতোমধ্যেই বেশ কিছু ক্রিপ্টো বিশেষজ্ঞ টেরাফর্মের করা এই কাজগুলোকে মন্দ নজরে দেখছেন । অনেকেই এটিকে একটি স্ক্যাম নামেও পরিচিতি দিয়েছেন । আবার অনেক বিশেষজ্ঞরাই প্রজেক্টকে বাচানোর জন্য যা যা করনীয় তা সম্পর্কে মন্তব্য করছেন ।
বিজনেস ইন্সাইডারকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ক্রিপ্টো বিলিয়নিয়র “বিল একম্যান” টেরার এলগোরিদমকে “পিরামিড স্কিমের ক্রিপ্টো ভার্সন” বলেছেন ।
বাইনান্সের সিইও “চ্যাংপেং ঝাও” টেরা লুনার চেইন ফোর্ক করার বিরুদ্ধে মতবাদ দিয়েছেন । তিনি আরও বলেছেন চেইন ফোর্ক করলেই সমস্যার সমাধান হবে না । উদাহরণস্বরুপ তিনি ইথেরিয়াম ক্লাসিকের কথা উল্লেখ করেছেন । চেইন ফোর্ক না করে বর্তমান চেইনেই পরিবর্তন আনার পরামর্শ সিজির ।
লুনাকে বাঁচাতে করনীয়
কয়েন আলাপের মতে বর্তমান চেইনে পরিবর্তন আনাটা খুবই জরুরী । তবে চেইন ফোর্ক করে যদি তা করা হয় তাহলে সেটা এক্সচেঞ্জগুলোর জন্য বেশ একটা বড় আপডেটের ও কঠোর হিসেবের ব্যাপার হয়ে যাবে । এক্সচেঞ্জগুলোকে অতিরিক্ত জনবল এখানে নিয়োগ করতে হবে । যা এক্সচেঞ্জগুলোর নিরাপত্তা ও ব্যবহারকারীরদের জন্য বেশ চিন্তার কারনও বটে । আবার কমিউনিটির মধ্যেও বেশ অমিল দেখা দিবে ।
বর্তমান চেইনে নতুন টোকেন উৎপাদনের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে । তা না হলে অতিরিক্ত সাপ্লাই কমানো কোন ভাবেই সম্ভব হবে না । আবার বর্তমানের এই অতিরিক্ত সাপ্লাইকে বার্ন করে কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে । যদি এটা করা না হয় তাহলে এই অতিরিক্ত সাপ্লাই এবং খুবই কম মূল্যের কারনে হোয়েলদের পাম্প ডাম্প করার জন্য পছন্দের একটি কয়েন হয়ে যাবে । এতে করে প্রজেক্টটি তার মূল লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে না ।
উপরের আলোচনা থেকে সহজেই বুঝা যায় বর্তমানে কয়েনের মূল্য বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই । তবে যদি কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় তাহলে স্বল্প সময়ের জন্য প্রজেক্টটিতে কিছুটা পাম্প-ডাম্প লক্ষ্য করা যাবে । যা বিনিয়োগকারীদের জন্য সমানভাবেই লাভ-ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়াবে । তবে আমার দেখা মতে এখন পর্যন্ত কোন প্রজেক্টকেই এইরকম পরিস্থিতি থেকে উঠতে দেখিনি । যা খুবই অশনি সংকেত নির্দেশ করে । অর্থাৎ প্রজেক্টটি পুনর্জীবিত হবার কোন সম্ভাবনা নেই । প্রজেক্টটির সিইও ডো কোয়েনকেও বর্তমানে কোন প্রকার ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না । বেশ কিছু বিনিয়োগকারী এই ক্র্যাশের কারনে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গিয়েছে ।
পূর্বেই আমরা বলেছিলাম কয়েন আলাপ কাউকে কোন প্রকার বিনিয়োগ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে না । তবে বর্তমানের এই পরিস্থিতিতে কয়েন আলাপ আপনাকে এই টেরা লুনা ও ইউএসটিতে কোনো প্রকার বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করছে ।