আলোচিত স্টেবলকয়েন ইউএসডি কয়েনের (USD Coin) ইস্যুয়ার সার্কেলের(Circle) সিইও, সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকে তাদের আটকে থাকা ৩.৩ বিলিয়ন ইউএস ডলারের এক্সেস পেতে সক্ষম হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সার্কেল, সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বিপর্যয়ের মধ্যে ওই ব্যাংকে তাদের ৩.৩ বিলিয়ন ডলার আটকে যাওয়ার খবর দিয়ে মার্কেটে বাজে ভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে। তাদের এই ধরনের স্টেটমেন্টের ফলে তাদের নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী ইউএসডিটির(USDT) কাছে মার্কেট শেয়ার হারায়।
সর্বশেষ যা জানা যাচ্ছেঃ
সার্কেলের সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা, জেরেমি অ্যালেয়ার, সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে, ১৩ মার্চ তারা দেউলিয়া হয়ে পড়া ব্যাংক সিলিকন ভ্যালিতে থাকা ৩.৩ বিলিয়ন ডলারের এক্সেস পেয়েছেন।
১৪ মার্চ, তিনি ব্লুমবার্গ মার্কেটসের (Bloomberg Markets) সাথে কথা বলার সময় বলেছেন “ঋণদাতাদের কাছে আমরা একদম সবকিছু পরিষ্কার করতে না পারলেও সবকিছুর কাছাকাছি হলেও পরিষ্কার করতে সক্ষম”।
সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকে তাদের নগদ অর্থ রিজার্ভ থাকার খবর প্রকাশ পাওয়ার পরপরই কয়েনটি ডিপেগ(Depegged) হয়।
ডিপেগ হওয়ার সহজ অর্থ হচ্ছে রেফারেন্স কয়েনের দামের সাথে ১ঃ১ না থাকা। আরো সহজ করে বললে ১ USDC=১ ইউএস ডলার না থাকা। স্টেবলকয়েনে যখন ইস্যু করা হয় তখন এর খুবই প্রাথমিক একটা কাজ হচ্ছে যখনই একজন গ্রাহক এক ইউএসডিসির মালিক হন তখন তার রেফারেন্স কয়েনের সমমূল্যের অর্থ ব্যাংকে জমা করা হয় (ইউএসডিসির রেফারেন্স কয়েন হচ্ছে ইউএস ডলার)। যদি ১ USDC সমান ০.৯৯ ইউ এস ডলারও হয় তখনই বুঝতে হবে ডিপেগ হয়েছে।
বর্তমানে এই স্টেবলকয়েনের ডলার ডিপেগ রিকভার হলেও, USDC-এর বিপুল পরিমাণ রিডেম্পশনের ফলে ট্রেডিংভিউর রিপোর্ট অনুসারে, ১১ মার্চ থেকে স্ট্যাবলকয়েনের মার্কেট ক্যাপ প্রায় ১০% কমে গিয়েছিলো।
অন্যদিকে, একই সময়ে USDC-এর প্রতিদ্বন্দ্বী, ক্রিপ্টো দুনিয়ার প্রথম স্টেবলকয়েন USDT, ১১ মার্চ থেকে তার নিজস্ব মার্কেট ক্যাপ একটু বাড়াতে সক্ষম হয়েছিলো (১% এর বেশি), যা ৭৩.০৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।
মার্চের ২ তারিখে জানুয়ারির রিজার্ভ রিপোর্ট অনুসারে, রিজার্ভে লক থাকা ৩.৩ বিলিয়ন ডলার, ৮% এরও কম ইউএসডিসি টোকেনের মূল্যের সমান হওয়ায় এটি ইউএসডিসির বাজারকে বেশ প্রভাবিত করে।
ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিলো যে, USDC’র জামানত ১০০ শতাংশেরও বেশি আছে এবং তার মধ্যে ৮০% এরও বেশি মার্কিন ট্রেজারি বিলের সমন্বিত রিজার্ভ আছে।
এদিকে, মঙ্গলবার রাতে USDC নেট রিডেম্পশন ৪ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করার পর আরখাম ইন্টেলিজেন্স ডেটার উদ্ধৃতি দিয়ে “দ্য ব্লক” জানায়, বুধবার দিনের শুরুর প্রথম দিকে প্রায় একক লেনদেনেই প্রায় ৭২৩ মিলিয়ন ইউএসডিসি বার্ন করা হয়েছে।
ডেটা আরও জানায়, ৩০০ মিলিয়ন ডলার থেকে ৬০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের USDC একাধিক পৃথক লেনদেনের মাধ্যমে বার্ন করা হয়েছে। শুধুমাত্র ওইদিনেই মোট বার্নের পরিমাণ ২.২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে বলে জানা গেছে।
ক্রিপ্টোতে বার্ন(Burn) বলতে বোঝায়, টোকেনগুলিকে কার্যত এমনো কোনো ঠিকানায় পাঠানো যার নিয়ন্ত্রণ কোন সত্ত্বাধিকারীর হাতে নেই। এটি করার মাধ্যমে, টোটাল সাপ্লাই কমিয়ে দেয়া হয়। স্টেবলকয়েনের ক্ষেত্রে বার্ন খুবই স্বাভাবিক ঘটনা যেটা মার্কেটে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে করা হয়।
অন্যদিকে, রিডেম্পশন হচ্ছে ধরুন,
আপনি ১ USDC মিন্ট করতে চান, মানে আপনার লাগবে। আপনি ইউএসডিসি ইস্যুয়ার সার্কেলকে ১ ডলার দিলেন আর বিনিময়ে তারা আপনাকে ১ USDC দিল। কিন্তু কিছুদিন পর বললেন, আপনি ১ USDC দিয়ে ১ ডলার ফেরত চান।