বিটকয়েন, ইথেরিয়াম এবং অন্যান্য শীর্ষ কয়েনের ২০২২ সালের শুরুটা খুবই খারাপ ভাবে শুরু হল। গত সপ্তাহে শীর্ষ ১০ টি কয়েনের অধিকাংশ ই ২ শতাংশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
শীর্ষ ২০ টি কয়েনের মধ্যে মাত্র একটি কয়েনের দাম গত সাত দিনে বেড়েছে। এছাড়া অন্য সব শীর্ষ কয়েন নতুন বছরে ২ শতাংশ ক্ষতির কথা পোস্ট করছে।মার্কেট লিডার বিটকয়েনের ও এই সপ্তাহে কিছু টা দাম কমে গেছে। গত ৭ দিনে প্রায় ১৩% দাম কমে গিয়েছে। এমন মন্দা অবস্থা থাকা সত্ত্বেও বিটকয়েন গত সপ্তাহে নতুন রেকর্ড গড়েছে,এটির হ্যাশরেট প্রতি সেকেন্ডে ২০৩.৫ এ টাচ করেছে, যা এযাবতকালের সর্বোচ্চ মান।
ব্লকচেইনে টোটাল কি পরিমাণ কম্পিউটিং পাওয়ার ( মাইনার) আছে,তার পরিমাপ ই হচ্ছে হ্যাশরেট।
এক্ষেত্রে বলা যায়, কম্পিউটিং পাওয়ার যত বেশি হবে, নেটওয়ার্ক তত সিকিউর হবে। অর্থাৎ ডিস্ট্রিবিউট লেজার সিস্টেম কে প্রতিহত করতে ( নিজের অধিকারে আনতে) নেটওয়ার্কের ৫১% হাইজ্যাক করতে আরো বেশি পাওয়ারের প্রয়োজন হবে।
বিটকয়েনের নতুন হ্যাশরেট রেকর্ড গত বছরের জুলাই থেকে ২০০% বৃদ্ধি পেয়েছে। যখন চীনে মাইনিংকে ক্র্যাকডাউন করা হয়েছিল, তারপর নেটওয়ার্কে হ্যাশরেট একদম কমে গিয়েছিল।
ফলে অনেক চীনা মাইনার কাজাখস্তানে চলে এসেছিল, যার ফলে নেটওয়ার্ক আগের চেয়ে আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। কিন্তু গত সপ্তাহে কাজাখস্তানে নাগরিক অস্থিরতা কমাতে দেশটির সরকার সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ রেখেছিল, ফলে নেটওয়ার্ক হ্যাশরেট প্রায় ১৭২ EH/s এ নেমে এসেছে, ( বিস্তারিত)
মঙ্গলবার, ইউনাইটেড স্টেটস সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নিউ ইয়র্ক ডিজিটাল ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ (NYDIG), বিটকয়েনের স্পট ইটিএফ আবেদন এপ্রুভ বা রিজেক্ট করার বিষয়ে একটি রায় দিতে দেরী করেছে। এই বছরের ১৬ মার্চ নতুন তারিখ ঠিক করা হয়েছে।
যার ফলে বিটকয়েন এই সপ্তাহে আরেকটি মাইলফলক হিট করেছে। বুধবার, বিশ্বের এক নম্বর ক্রিপ্টোকারেন্সি ৩৭.২৮% এ নেমে গেছে। এটি ২০১৮ সাল থেকে বিটকয়েন বাজারের সর্বনিম্ন অবস্থা, যদিও এর মানে হল একটি মুদ্রা একাই বাজারের এক তৃতীয়াংশের বেশি জায়গা জুড়ে আছে৷
এছাড়াও বুধবার, ইউএস ফেডারেল রিজার্ভ ইঙ্গিত দিয়েছে যে এটি সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এবং মার্চের মাঝামাঝিতে টাকা ছাপানো বন্ধ করতে পারে। ফলে বিটকয়েনের মূল্য ৬% কমেছে এবং ক্রিপ্টোর গ্লোবাল মার্কেট ক্যাপ, এই খবরের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৬% কমেছে। শেয়ারের দামও ৩ শতাংশের বেশি কমেছে।
বুধবার, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক জেপি মরগানের বিশ্লেষকদের একটি দল ঘোষণা করেছে যে ভবিষ্যতে ইথেরিয়াম অ্যাভাল্যাঞ্চ, সোলানা এবং টেরা এর জন্য অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে, কারণ এদের সকলেই ইথেরিয়ামের চেয়ে বেশি সার্ভিস এবং কম গ্যাস ফি প্রদান করছে।
একই দিনে, ক্রিপ্টো ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম ইলেকট্রিক ক্যাপিটালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে পলকাডট, অ্যাভাল্যাঞ্চ, সোলানা এবং টেরা এদের সবারই ইথেরিয়ামের তুলনায় দ্রুত প্রারম্ভিক গ্রোথ হয়েছে, ( বিস্তারিত)।
মজার ব্যাপার হল, Solana, Avalanche এবং Terra’s LUNA এই সপ্তাহে সবচেয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, প্রতিটি কারেন্সী এই সাত দিনে ২০%-এর বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সোলানার এক সপ্তাহে ২৩% কমেছে এবং বর্তমানে $১৩৪.৫০ এ ট্রেড করছে। Avalanche এবং LUNA ২৯% কমে যথাক্রমে $৮০.২৭ এবং $৬৩.৬৯ হয়েছে।
ক্রিপ্টোর জন্য ২০২২ এ এটি একটি হতাশাজনক শুরু , কিন্তু সামনে কি হবে, এটা ভেবে ক্রিপ্টো নিয়ে উত্তেজনা এখনে কমেনি।